ঢাকা ০৯:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান সুমন নিউইয়র্ক পুলিশের লেফটেন্যান্ট হলেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২১৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের অন্যতম সেরা পুলিশ বাহিনী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের (এনওয়াইপিডি) লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান সুমন এম. সৈয়দ। তিনি এনওয়াইপিডির বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

নিউইয়র্ক পুলিশের চাকরিতে যোগদানের প্রথম ধাপ হচ্ছে অফিসার পদ। পরীক্ষায় উন্নীত হয়ে সুমন সৈয়দ সার্জেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি সার্জেন্ট থেকে লেফটেন্যান্ট পদের পরীক্ষায় উন্নীত হন। স্থানীয় সময় বুধবার সকালে নিউইয়র্ক পুলিশের সদর দপ্তর ওয়ান পুলিশ প্লাজায় জমকালো এক অনুষ্ঠানে সুমনের হাতে পদোন্নতির সার্টিফিকেট তুলে দেন পুলিশ কমিশনার ডারমোট শিয়া। পরে সুমনের স্ত্রী সৈয়েদা শায়লা মাসুদ কান্তা তাকে লেফটেন্যান্ট ব্যাজ পরিয়ে দেন।

অনুষ্ঠানে লেফটেন্যান্ট সুমনের পরিবার ছাড়াও বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট প্রিন্স আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি সার্জেন্ট এরশাদুর সিদ্দিকী, মিডিয়া লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি, কমিউনিটি লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ মাসুদ রহমান, ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর অফিসার সরদার মামুন, সার্জেন্ট সোহেল খান ও সার্জেন্ট সাইদুল ও সাবেক ট্রাস্টি ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি জানান, সুমন সৈয়দ ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। সেসময় মাত্র তিন থেকে চারজন বাংলাদেশি-আমেরিকান নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। কঠোর ত্যাগ এবং পরিশ্রমী অফিসার হিসেবে খুব অল্প দিনেই পুলিশ বিভাগে সুনাম অর্জন করেন তিনি। পেশার প্রতি কমিটমেন্ট, দক্ষতা ও সেবার অনন্য নজীর স্থাপন করেন বাংলাদেশি অফিসাররা। ফলে অতি অল্পদিনে পুরো পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশি অফিসারদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের এই পেশায় যোগ দেয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়ে যায়।

তাছাড়া সুমন সৈয়দ ব্যক্তিগতভাবে সবসময় চাইতেন আরও বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি পুলিশ বিভাগে যোগদান করুক। তাই কমিউনিটির জন্য কাজ করতে তিনিসহ কয়েকজন অফিসার মিলে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি মুসলিম অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের করসপন্ডেন্ট সেক্রেটারিও ছিলেন।

পদোন্নতি পেয়ে লেফটেনেন্ট সুমন এম. সৈয়দ প্রথমেই পরম করুণাময় আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া জানান। এরপর তিনি স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, বন্ধু, আত্মীয়, বাপাসহ পুলিশ বিভাগের সকল সহকর্মী, বিশেষ করে বাংলাদেশি আমেরিকান অফিসার, সকল সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সুমন সৈয়দ বলেন, আমার এ পদোন্নতি এ প্রজন্মের বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে পুলিশ বিভাগে কাজ করার আগ্রহ সৃষ্টি করবে। আর তারা এগিয়ে এলেই নিউইয়র্ককে আমরা একটা নিরাপদ, পরিছন্ন, স্বাস্থকর সর্বোপরি সবদিক দিয়ে বসবাসের উপযোগী একটি সুন্দর নগরী গড়ে তুলতে পারবো। উল্লেখ্য, সুমন সৈয়দ সপরিবারে নিউইয়র্ক শহরের কুইন্সে বসবাস করছেন। তিনি লেখাপড়া করেছে নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটিতে।

উল্লেখ্য, লেফটেন্যান্ট পদের পরবর্তী ধাপ নির্বাহী কর্মকর্তার ক্যাপ্টেন পদ। এই পদ থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশের শীর্ষপদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেদিক থেকে দুজন বাংলাদেশি খন্দকার আব্দুল্লাহ ও কারাম চৌধুরী এগিয়ে রয়েছেন। যারা ইতিমধ্যে ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাদের দুজনের গ্রামের বাড়ি বৃহত্তর সিলেটে। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে আরো বেশ কয়েকজন ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক পুলিশে দুই শতাধিক বাংলাদেশি নিয়মিত অফিসার ও সহস্রাধিক বাংলাদেশি ট্রাফিক এজেন্ট রয়েছেন। ট্রাফিক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যানেজার পদেও দায়িত্ব পালন করছেন বেশকয়েকজন বাংলাদেশি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান সুমন নিউইয়র্ক পুলিশের লেফটেন্যান্ট হলেন

আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বের অন্যতম সেরা পুলিশ বাহিনী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের (এনওয়াইপিডি) লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার কৃতি সন্তান সুমন এম. সৈয়দ। তিনি এনওয়াইপিডির বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

নিউইয়র্ক পুলিশের চাকরিতে যোগদানের প্রথম ধাপ হচ্ছে অফিসার পদ। পরীক্ষায় উন্নীত হয়ে সুমন সৈয়দ সার্জেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি সার্জেন্ট থেকে লেফটেন্যান্ট পদের পরীক্ষায় উন্নীত হন। স্থানীয় সময় বুধবার সকালে নিউইয়র্ক পুলিশের সদর দপ্তর ওয়ান পুলিশ প্লাজায় জমকালো এক অনুষ্ঠানে সুমনের হাতে পদোন্নতির সার্টিফিকেট তুলে দেন পুলিশ কমিশনার ডারমোট শিয়া। পরে সুমনের স্ত্রী সৈয়েদা শায়লা মাসুদ কান্তা তাকে লেফটেন্যান্ট ব্যাজ পরিয়ে দেন।

অনুষ্ঠানে লেফটেন্যান্ট সুমনের পরিবার ছাড়াও বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক লেফটেন্যান্ট প্রিন্স আলম, সিনিয়র সহ-সভাপতি সার্জেন্ট এরশাদুর সিদ্দিকী, মিডিয়া লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি, কমিউনিটি লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ মাসুদ রহমান, ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর অফিসার সরদার মামুন, সার্জেন্ট সোহেল খান ও সার্জেন্ট সাইদুল ও সাবেক ট্রাস্টি ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি জানান, সুমন সৈয়দ ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। সেসময় মাত্র তিন থেকে চারজন বাংলাদেশি-আমেরিকান নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। কঠোর ত্যাগ এবং পরিশ্রমী অফিসার হিসেবে খুব অল্প দিনেই পুলিশ বিভাগে সুনাম অর্জন করেন তিনি। পেশার প্রতি কমিটমেন্ট, দক্ষতা ও সেবার অনন্য নজীর স্থাপন করেন বাংলাদেশি অফিসাররা। ফলে অতি অল্পদিনে পুরো পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশি অফিসারদের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাংলাদেশি-আমেরিকানদের এই পেশায় যোগ দেয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়ে যায়।

তাছাড়া সুমন সৈয়দ ব্যক্তিগতভাবে সবসময় চাইতেন আরও বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি পুলিশ বিভাগে যোগদান করুক। তাই কমিউনিটির জন্য কাজ করতে তিনিসহ কয়েকজন অফিসার মিলে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশি-আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তিনি মুসলিম অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের করসপন্ডেন্ট সেক্রেটারিও ছিলেন।

পদোন্নতি পেয়ে লেফটেনেন্ট সুমন এম. সৈয়দ প্রথমেই পরম করুণাময় আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া জানান। এরপর তিনি স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, বন্ধু, আত্মীয়, বাপাসহ পুলিশ বিভাগের সকল সহকর্মী, বিশেষ করে বাংলাদেশি আমেরিকান অফিসার, সকল সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সুমন সৈয়দ বলেন, আমার এ পদোন্নতি এ প্রজন্মের বাংলাদেশি আমেরিকানদের মধ্যে পুলিশ বিভাগে কাজ করার আগ্রহ সৃষ্টি করবে। আর তারা এগিয়ে এলেই নিউইয়র্ককে আমরা একটা নিরাপদ, পরিছন্ন, স্বাস্থকর সর্বোপরি সবদিক দিয়ে বসবাসের উপযোগী একটি সুন্দর নগরী গড়ে তুলতে পারবো। উল্লেখ্য, সুমন সৈয়দ সপরিবারে নিউইয়র্ক শহরের কুইন্সে বসবাস করছেন। তিনি লেখাপড়া করেছে নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটিতে।

উল্লেখ্য, লেফটেন্যান্ট পদের পরবর্তী ধাপ নির্বাহী কর্মকর্তার ক্যাপ্টেন পদ। এই পদ থেকেই রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশের শীর্ষপদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেদিক থেকে দুজন বাংলাদেশি খন্দকার আব্দুল্লাহ ও কারাম চৌধুরী এগিয়ে রয়েছেন। যারা ইতিমধ্যে ক্যাপ্টেন পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তাদের দুজনের গ্রামের বাড়ি বৃহত্তর সিলেটে। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে আরো বেশ কয়েকজন ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতির অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে নিউইয়র্ক পুলিশে দুই শতাধিক বাংলাদেশি নিয়মিত অফিসার ও সহস্রাধিক বাংলাদেশি ট্রাফিক এজেন্ট রয়েছেন। ট্রাফিক বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যানেজার পদেও দায়িত্ব পালন করছেন বেশকয়েকজন বাংলাদেশি।